স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি, ব্ল্যাকবেরি, রাশবেরির মতো ফলগুলো পুষ্টিগুণে ভরপুর, যা হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কাজ করে। এই ফলগুলো অ্যান্থোসায়ানিন নামের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ।


প্রতিদিনের খাবারের ওপর নির্ভর করে আমাদের স্বাস্থ্য। বিশেষ করে হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্য খাবারের ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল। তাই হৃৎপিণ্ড ভালো রাখে- এমন খাবারের দিকে আমাদের নজর দেয়া খুব জরুরি। হেলথলাইন ওয়েবসাইটের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে হৃৎপিণ্ড ভালো রাখে এমন সব খাবারের কথা। চলুন দেখে নেই।

১. সবুজ শাক-সবজি

অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ সবুজ শাক যেমন- পালংশাক, কলমিশাক, সরিষাশাক হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্যের জন্য দারুণ উপকারী। এতে আরও আছে নানা ধরনের ভিটামিন ও খনিজ উপাদান। বিশেষ করে ভিটামিন কে শরীরের ধমনিগুলোকে সুস্থ রাখে এবং রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা দেয়।

শাকে থাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ডায়েটারি নাইট্রেট। এগুলো রক্তচাপ কমাতে, ধমনির দৃঢ়তা হ্রাস করতে এবং রক্তনালিগুলোর কোষগুলোর কার্যকারিতা বাড়াতে কাজ করে।

২. শস্যদানা

গম, বার্লি, ওটস, রাই ইত্যাদি শস্য রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এতে থাকে কার্বোহাইড্রেড, যা করোনারি হার্ট ডিজিস কমাতে কাজ করে। দিনে এক-দুইবার এসব শস্য দিয়ে বানানো খাবার খেতে পারলে হৃদরোগ ১০ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়।


৩. বেরি জাতীয় ফল

স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি, ব্ল্যাকবেরি, রাশবেরির মতো ফলগুলো পুষ্টিগুণে ভরপুর, যা হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কাজ করে। এই ফলগুলো অ্যান্থোসায়ানিন নামের অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ। এই উপাদানটি অক্সিডেটিভ স্ট্রেস এবং প্রদাহ থেকে হৃৎপিণ্ডকে রক্ষা করে।

প্রতিদিন ব্লুবেরি খেলে রক্তনালির কোষগুলোর কার্যকারিতা বেড়ে যায়। ফলে রক্তচাপ ও রক্ত জমাটবাঁধা নিয়ন্ত্রণে থাকে।

৪. মাছ ও মাছের চর্বি

সামুদ্রিক মাছ যেমন- স্যামন, সার্ডিন, টুনা মাছের চর্বিতে ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায়। এই উপাদানটি হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে প্রতিরক্ষামূলক ভূমিকা পালন করে। নিয়মিত মাছ খেলে খারাপ কোলেস্টেরল অর্থাৎ ট্রাইগ্লিসারাইড নিয়ন্ত্রণে থাকে। এ ছাড়া মাছ আমাদের কার্ডিওভাসকুলার রোগগুলো থেকে এড়িয়ে থাকতে সাহায্য করে।

৫. বাদাম

বিভিন্ন ধরনের বাদাম বাজারে পাওয়া যায়। এর সবই হৃদযন্ত্রের জন্য ভালো। ওয়ালনাট খুব সহজলভ্য একটি বাদাম। এর ফাইবার ও মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস যেমন ম্যাগনেশিয়াম, কপার ও ম্যাঙ্গানিজ হৃৎপিণ্ডের জন্য দারুণ উপকারী।

কাঠবাদাম রক্তের কোলেস্টেরল লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখে। চীনাবাদাম লো-গ্লাইসেমিক ইনডেক্স সমৃদ্ধ খাবার। এটা হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখার পাশাপাশি ডায়াবেটিস প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রাখে। সব ধরনের বাদামই ভালো, তবে চীনাবাদাম সহজলভ্য বলে এটি প্রতিদিন খাওয়া যেতে পারে।

৬. রসুন

অনেক আগে থেকেই মানুষ রসুনের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানে। এতে আছে অ্যালিসিন। এই উপাদানটি হৃদযন্ত্র ভালো রাখতে কাজ করে। নিয়মিত রসুন খেলে রক্তচাপ কমে। খারাপ কোলেস্টেরল কমাতেও এটা কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে।

৭. অলিভ অয়েল

অলিভ অয়েল অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর বলে এটা প্রদাহ কমাতে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে দারুণ কার্যকর। এতে আছে মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড। হৃদযন্ত্রের যত্ন নিতে এই উপাদানটি খুব প্রয়োজন।

৮. গ্রিন টি

গ্রিন টির আছে অনেক ধরনের গুণ। এটি চর্বি কাটে। ইনসুলিন উৎপাদনেও কাজ করে। ফলে ডায়াবেটিস রোগীরা উপকার পান। হৃদযন্ত্রের জন্যেও কাজ করে গ্রিন টি। এতে আছে হৃৎপিণ্ডের জন্য খুব দরকারি পলিফেনল ও ক্যাটেচিন। এটা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। এলডিএল কোলেস্টেরল কমাতেও এর জুড়ি নেই।